জয়ন্ত ভট্টাচার্য
ভারতেরযোদ্ধা সাধুদের যেসম্প্রদায়গুলি বিগত কয়েক শতক ধরে উত্তর ও পশ্চিম ভারতের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অত্যন্ত প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে তার মধ্যে নাথ বা কানফাটা যোগীরা ছাড়া অষ্টম শতক সাধারণাব্দের আদি শঙ্করাচার্য প্রবর্তিত বলে অনুমিত শৈব দশনামী সম্প্রদায়, পঞ্চদশ শতক সাধারণাব্দেরবৈষ্ণবসাধু রামানন্দের অনুসারী রামানন্দী ও অন্য বৈষ্ণবসম্প্রদায় এবং পঞ্চদশ-ষোড়শ শতক সাধারণাব্দের প্রথম শিখ গুরু নানকের অনুগামী উদাসীন সম্প্রদায়ভুক্ত সাধুরা সবচেয়ে উল্লেখনীয়।ঐতিহ্য অনুযায়ী দশনামী যোদ্ধা সাধুদের সন্ন্যাসী ও রামানন্দী ও অন্য বৈষ্ণব যোদ্ধা সাধুদের বৈরাগী বলে অভিহিত করা হয়।বিগত বেশ কয়েক শতক ধরে উত্তর, পশ্চিম ও পূর্ব ভারতের বহু ধর্মীয় সমাগমে, বিশেষত, উত্তরপ্রদেশেরপ্রয়াগরাজ (এলাহাবাদ), মহারাষ্ট্রের নাশিক, উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বার ও মধ্যপ্রদেশের উজ্জৈন শহরে প্রতি ১২ বছর অন্তর অনুষ্ঠিত কুম্ভপর্ব এবং ৬ বছর অন্তর অনুষ্ঠিত অর্ধকুম্ভের সময় বিশেষ বিশেষ দিনে নদীতে স্নানের জন্য এই যোদ্ধা সাধুরা বিপুল সংখ্যায় দলবদ্ধভাবে সমবেত হন।যোদ্ধা সাধুদের অধিকাংশই নগ্নতাকে গ্রহণ করে নাগা সাধু নামে পরিচিতআরনাগা সাধুদের দলগুলি কোনও না কোনওসম্প্রদায়ের আখাড়ার সঙ্গে যুক্ত।অধিকাংশ আখাড়ার সাধুদের গদ্দী বা বৈঠক (মঠ বা আশ্রম) উত্তর ও পশ্চিম ভারতের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত।
ভারতের যোদ্ধা সাধুদের আখাড়ার ধারণা প্রাচীন ও আদি-মধ্যযুগে রচিত সংস্কৃত শাস্ত্রগ্রন্থে, বিশেষত সন্ন্যাস উপনিষদগুলিতে উল্লিখিত উচ্চবর্গের সন্ন্যাসের ধারণা থেকে যথেষ্টই পৃথক।যোদ্ধা সাধুদের কাছে মোক্ষসাধনার জন্য শাস্ত্রচর্চা, ধ্যান বা বীজমন্ত্র জপের চেয়ে শরীরচর্চা বা শরীরের সহ্যক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শস্ত্রচর্চা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।সম্ভবত মল্লযোদ্ধাদের আখাড়ায় স্বল্প বস্ত্র পরিধান করে বা প্রায় নগ্ন হয়ে শরীরচর্চার রীতি থেকেই নগ্নতার প্রয়োজনীয়তার ধারণাও যোদ্ধা সাধুদের আখাড়ায় গৃহীত হয়েছে।মল্লযোদ্ধাদের নিয়মানুবর্তিতা ও অনুশাসনকেই যোদ্ধা সাধুদের কাছে তপস্যার অঙ্গ বলে অনুভূত হয়েছে।যোদ্ধা সাধুদের আধ্যাত্মিক ধারণায় এই পরিবর্তনের পিছনে যোদ্ধা সাধুদের আখাড়ায় নিম্নবর্গের অংশগ্রহণের প্রভাব নিয়ে মার্কিন নৃবিজ্ঞানী জোসেফ অল্টারের পর্যবেক্ষণ প্রণিধানযোগ্য।তিনি লক্ষ করেছেন, মোগল আমলে যোদ্ধা সাধুদের সংগঠনে বিভিন্ন জাতির মানুষের সম্মিলনের সাথে সাথে সামরিক রীতিনীতিকে নিজেদের জীবনচর্যার অন্তর্ভুক্ত করতে দেখা গেছে। তাঁদের কাছে যুদ্ধ কেবল আত্মরক্ষার জন্য শস্ত্রগ্রহণ নয়, যুদ্ধ তাঁদের পরিচিতির একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গে পরিণত হয়ে ওঠে।তাঁর মতে, শূদ্রদের যোদ্ধা সন্ন্যাসীদের সংগঠনে অন্তর্ভুক্তির ফলে যে কোনও কারণেই হোক, এটা স্পষ্ট যে তাঁরামল্লযোদ্ধাদের মতোইআধ্যাত্মিকতাকে পার্থিব কার্যকলাপের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে রূপান্তরিত করেছিলেন।১ মল্লযোদ্ধাদের আখাড়ায় হনুমান উপাসনা নিয়ে জোসেফ অল্টার অত্যন্ত যৌক্তিক অনুমান করেছেন, পুরাকথায় হনুমান চরিত্রে শক্তি, ভক্তি ও ব্রহ্মচর্যের সম্মিলন মল্লযোদ্ধাদের নিজেদের পরিচিতি নির্মাণে আদর্শ হিসাবে কাজ করে।২ উত্তর ও পশ্চিম ভারতের শৈব ও বৈষ্ণব উভয় সম্প্রদায়ের যোদ্ধা সাধুদের আখাড়াগুলিতে এই একই কারণে হনুমান পূজিত হন। সম্ভবত যোদ্ধাসুলভ নিয়মানুবর্তিতা ও অনুশাসনকেই সন্ন্যাস ধর্মের মৌলিক উদ্দেশ্য বলে গ্রহণ করার কারণে গোসাইঁ যোদ্ধা সাধুরাও বিবাহ না করে ব্রহ্মচর্য পালনকে সন্ন্যাস জীবনের অপরিহার্য অঙ্গ বা বাণিজ্য ও যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে অর্থ উপার্জনকে অসংগত বলে মনে করেননি।
আখাড়া ও অনী
বর্তমানে ভারতে আখাড়া ও অনী (কয়েকটি বৈষ্ণবআখাড়ার সম্মিলিত সংগঠন) মিলিয়ে যোদ্ধা সাধুদের ১৩টি সংগঠন বিদ্যমান।এর মধ্যে রয়েছে শৈব দশনামী সম্প্রদায়ের সন্ন্যাসীদের ৭টি আখাড়া, বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের বৈরাগীদের আখাড়াগুলির ৩টি অনী, নানকপন্থীসম্প্রদায়ভুক্ত৩টি আখাড়া- উদাসীন সাধুদের ২টি আখাড়া এবং নির্মল আখাড়া। দশনামী সন্ন্যাসীদের আখাড়াগুলির নাম শ্রী পঞ্চায়তী আখাড়ামহানির্বাণী, শ্রী পঞ্চায়তী আখাড়া নিরঞ্জনী, শ্রী পঞ্চ অটলআখাড়া, শ্রী তপোনিধি আনন্দ আখাড়া পঞ্চায়তী, শ্রী পঞ্চ দশনাম জুনা আখাড়া, শ্রী পঞ্চ দশনাম আবাহনআখাড়া, ও শ্রী পঞ্চ দশনাম পঞ্চ অগ্নিআখাড়া।আগন ও অলখিয়া নামের দুটি নাথপন্থী যোগীদের আখাড়ার সাধুরা কুম্ভ বা অর্ধকুম্ভেরশাহী স্নানের শোভাযাত্রায় জুনা আখাড়ার সঙ্গে অংশগ্রহণ করেন।বৈষ্ণব বৈরাগীদের ৩টি অনী – দিগম্বর অনী, নির্বাণী অনী ও নির্মোহী অনীএবংএই ৩টি অনীর মুখ্য অংশ ৩টি রামানন্দী আখাড়া – শ্রী পঞ্চ রামানন্দী দিগম্বর আখাড়া, শ্রী পঞ্চ রামানন্দী নির্বাণী আখাড়াও শ্রী পঞ্চ রামানন্দী নির্মোহী আখাড়া।রামানন্দী বৈরাগী সাধুদের এ ছাড়া খাকী, সন্তোষী, নিরাবলম্বী ও মহানির্বাণী নামের আরও ৪টি আখাড়া রয়েছে।৩ এই ৪টি রামানন্দী আখাড়া ছাড়াও বৈষ্ণব নিম্বার্ক, মাধ্ব ও বিষ্ণুস্বামী সম্প্রদায়ভুক্ত আখাড়াগুলির সাধুরাওশাহী স্নানের শোভাযাত্রায় ৩টি বৈষ্ণব অনীর মধ্যে কোনও না কোনওটির অংশ হিসাবে যোগদান করেন। নানকপন্থী সাধুদের বিদ্যমান আখাড়াগুলির নাম শ্রী পঞ্চায়তী আখাড়াবড়া উদাসীন, শ্রী পঞ্চায়তী আখাড়ানয়া (বা ছোটা) উদাসীন ও শ্রী পঞ্চায়তী আখাড়ানির্মল।
| দশনামী সন্ন্যাসী | রামানন্দী বৈরাগী | অন্যান্য বৈষ্ণব বৈরাগী | নানকপন্থী |
| মহানির্বাণী | দিগম্বর | বিষ্ণুস্বামী | বড়া উদাসীন |
| নিরঞ্জনী | নির্বাণী | মালাধারী | নয়া (বা ছোটা) উদাসীন |
| অটল | নির্মোহী | ঝাড়িয়া | নির্মল |
| আনন্দ | খাকী | রাধাবল্লভী | |
| জুনা (ভৈরব) | সন্তোষী | বলভদ্রী | নাথপন্থী যোগী |
| আবাহন | নিরাবলম্বী | হরিব্যাসী | আগন |
| অগ্নিবা পঞ্চ অগ্নি | মহানির্বাণী | টাটম্বরী | অলখিয়া |
সারণি ১ – ভারতের যোদ্ধা সাধুদের মুখ্য আখাড়াসমূহ
অন্ত-মধ্যযুগে, খুব সম্ভবত ষোড়শ শতক সাধারণাব্দ থেকে উত্তর ও পশ্চিম ভারতের বিভিন্ন স্থানে প্রথমে দশনামী সন্ন্যাসী ও তারপর রামানন্দী বৈরাগী যোদ্ধা সাধুদের আখাড়াগুলি গড়ে উঠতে শুরু করে।গোবিন্দ সদাশিব ঘুর্য়ের মতে দশনামী সন্ন্যাসীদের কোনও আখাড়ার উদ্ভব ১৬০০ সাধারণাব্দের পর হয়নি।তাঁর মতে, রামানন্দী বৈরাগীদের আখাড়াগুলির উদ্ভব ১৬৫০ থেকে ১৭০০ সাধারণাব্দের মধ্যবর্তী কালপর্বে।৪ ১৭৮৭ সালে প্রথম নানকপন্থী আখাড়া উদাসীন স্থাপিত হয়।
উনিশ শতক থেকে আখাড়াগুলির সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য সাধুদের পঞ্চায়েত, এবং পঞ্চায়েতের সরপঞ্চদের দ্বারা নির্বাচিত মণ্ডলেশ্বর, মহামণ্ডলেশ্বর, আচার্য প্রমুখ পদের সৃষ্টি করা হয়েছে। এই কারণে সব আখাড়ার নামের সঙ্গেই পঞ্চায়তী কথাটি যুক্ত রয়েছে। যদুনাথ সরকার লিখেছেন, ১৮০০ সাল নাগাদ দশনামী সম্প্রদায়ের ৭টি আখাড়ায় মণ্ডলেশ্বর নির্বাচনের রীতি শুরু হয়।এই ৭টি আখাড়ার অন্তর্গত কোনও মঠের মহান্তের মৃত্যুর পর তাঁর উত্তরাধিকারী প্রবল বিদ্বান বলে বিবেচিত হলে তাঁকে মণ্ডলেশ্বর হিসাবে নির্বাচিত করা হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর আখাড়ারঅন্য সাধুরা তাঁর কপালে তিলক পরিয়ে, তাঁকে নজর হিসাবে অর্থ প্রদান করে ও চাদর প্রদান করে সম্মানিত করেন।সাধারণত কোনও আখাড়ায় যদি ৩ বা ৪ জন মণ্ডলেশ্বর থাকেন, তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বিশিষ্ট ব্যক্তিকে আচার্য নির্বাচিত করা হয়।কিছু ক্ষেত্রে মণ্ডলেশ্বররা তাঁদের পুরোনো মঠ ত্যাগ করে নতুন মঠ স্থাপন করে সেখানকার মহান্ত হয়ে বাকি জীবন কাটান।৫
অন্ত-মধ্যযুগ থেকে ভারতীয় উপমহাদেশের আখাড়াগুলির সাধুদের সবচেয়ে উল্লেখনীয় ধর্মীয় কৃত্য দলবদ্ধভাবে দীর্ঘ পথ পরিক্রমা করে উত্তর, পূর্ব ও পশ্চিম ভারতের এক তীর্থ থেকে আর এক তীর্থে পুণ্য দিনে উপস্থিতি।এই প্রসঙ্গে প্রথমেই উল্লেখ করা দরকার উত্তর ও পশ্চিম ভারতের ৪টি তীর্থক্ষেত্রের কুম্ভ ও অর্ধকুম্ভ স্নানের কথা।স্নানের জন্য বিহিত পুণ্য দিনগুলি সূর্য, চন্দ্র ও বৃহস্পতি গ্রহের খগোলে অবস্থানের সঙ্গে যুক্ত।বৃহস্পতি গ্রহ পৃথিবীর প্রায় ১২ সৌর বছরে সূর্যকে একবার পরিক্রমা সম্পূর্ণ করে। ধর্মীয় ঐতিহ্য অনুযায়ী প্রত্যেক ১২ বছর বাদে বৃহস্পতি খগোলে যে সময় বিশেষ রাশিতে অবস্থান করে সেই সময় গঙ্গা বা দক্ষিণ গঙ্গা (গোদাবরী) নদীতে স্নান করলে পাপমুক্ত হওয়া যায়।প্রত্যেক ১২ বছর বাদে যখন খগোলে বৃহস্পতি কুম্ভ রাশিতে অবস্থান করে এবং সূর্য মেষ রাশিতে প্রবেশ করে অর্থাৎ মেষ সংক্রান্তির দিন গঙ্গাদ্বার অর্থাৎ হরিদ্বারে গঙ্গায় কুম্ভ স্নান করার বিধি, একে মেষ কুম্ভ বলা হয়। হরিদ্বারের কুম্ভমেলায় তিনটি পুণ্য দিনে স্নান করার বিধি – শিবরাত্রি, চৈত্র অমাবস্যা (প্রধান স্নান) এবং মেষ সংক্রান্তি বা চৈত্র সংক্রান্তি (প্রধান স্নান)। প্রত্যেক ১২ বছর বাদে যখন খগোলে বৃহস্পতি কুম্ভ রাশিতে অবস্থান করে এবং সূর্য মকর রাশিতে প্রবেশ করে অর্থাৎ মকর সংক্রান্তির দিন (জানুয়ারি মাসে) প্রয়াগে (এলাহাবাদে) গঙ্গা ও যমুনার সঙ্গমস্থলে কুম্ভ স্নান করার বিধি, একে মকর কুম্ভ বলা হয়।প্রয়াগের কুম্ভমেলায় তিনটি পুণ্য দিনে স্নান করার বিধি – মকর সংক্রান্তি, মাঘী বা মৌনী অমাবস্যা (প্রধান স্নান) এবং মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী বা বসন্ত পঞ্চমীর দিন। প্রত্যেক ১২ বছর বাদে সূর্য, মঙ্গল ও বৃহস্পতি যখন খগোলে সিংহ রাশিতে অবস্থান করে, তখন নাশিকে গোদাবরী নদীতে কুম্ভ স্নান করার বিধি, একে সিংহস্থ বলা হয়। নাশিকের কুম্ভমেলা আষাঢ় মাসের শুক্লা একাদশী তিথি থেকে কার্তিক মাসের শুক্লা একাদশী বা দেবোত্থান একাদশী পর্যন্ত চার মাস ধরে চলে এবং তিনটি পুণ্য দিনে স্নানের বিধি – শ্রাবণ মাসে সূর্য, মঙ্গল ও বৃহস্পতি যখন সিংহস্থ (প্রধান স্নান), ভাদ্র মাসের অমাবস্যা ও কার্তিক মাসের শুক্লা দেবোত্থান একাদশী। প্রত্যেক ১২ বছর বাদে বৈশাখ মাসের শুক্ল পক্ষে সূর্য যখন খগোলে মেষ রাশিতে ও বৃহস্পতি সিংহ রাশিতে অবস্থান করে, উজ্জৈনে শিপ্রা নদীতে কুম্ভ স্নান করার বিধি, একেও সিংহস্থ বলা হয়।এখানে এই একটিই পুণ্য দিনে স্নানের বিধি। হরিদ্বার ও প্রয়াগে ৬ বছর বাদে অর্ধকুম্ভ অনুষ্ঠিত হয়, নাশিক বা উজ্জৈনে হয় না।৬
অন্ত-মধ্যযুগের শেষ দিকে উত্তর ভারতের যোদ্ধা সাধুদের দলগুলি প্রত্যেক বছর ফাল্গুন মাসের (ফেব্রুয়ারি-মার্চ) কৃষ্ণা অষ্টমী তিথিতে নেপালের তরাই অঞ্চলে বর্তমান মধেশ প্রদেশের জনকপুরে, পৌষ সংক্রান্তির দিন (জানুয়ারির মাঝামাঝি) দক্ষিণ বাংলার সাগরে গঙ্গাসাগর মেলায় এবং আষাঢ় মাসের শুক্ল পক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে ওড়িশার পুরীতে রথযাত্রায় উপস্থিত হতেন বলে জানা যায়।৭
ষোড়শ থেকে উনিশ শতক সাধারণাব্দ পর্যন্ত কুম্ভ, অর্ধকুম্ভ ও অন্যান্য মেলায় শৈব দশনামী, বৈষ্ণব রামানন্দী ও উদাসীন সম্প্রদায়ভুক্ত আখাড়াগুলির যোদ্ধা সাধুদের মধ্যে নিয়মিত সংঘর্ষের কথা জানা যায়।এই সংঘর্ষগুলির অন্যতম কারণ ছিল বিশেষ পুণ্য দিনগুলিতে বিভিন্ন আখাড়াগুলির সঙ্গে যুক্ত সন্ন্যাসীদের শাহী স্নান (সাম্প্রতিক সংস্কৃতায়িত নতুন নাম অমৃত স্নান) অর্থাৎ হাতি, ঘোড়া, উট পালকি সহযোগে দলবদ্ধ ভাবেমিছিল করে নদীতে অবগাহন স্নানে যাওয়ার সময় অগ্রাধিকার লাভ এবং কুম্ভমেলায় আগত তীর্থযাত্রীদের কাছ থেকে অধিক সম্মান ও অর্থলাভ।এই সংঘর্ষগুলিতে বহুসংখ্যক সাধুর হতাহত হওয়ার কথাও জানা যায়।এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখনীয় সম্ভবত ১৭৮৯ সালে নাশিকে সিংহস্থ পর্বের সময় শৈব দশনামী সন্ন্যাসী ও বৈষ্ণব বৈরাগীদের আখাড়াগুলির যোদ্ধা সাধুদের মধ্যে গোদাবরী নদীর কাশী সঙ্গমে সংঘর্ষ।এই সংঘর্ষে ১২,০০০ সাধুর মৃত্যু হয়।এই বিবাদের নিষ্পত্তির জন্য খাকী আখাড়ার মহান্ত দয়ারাম দাস ও চিত্রকূটের বৈষ্ণব নাগা সাধু পুরুষোত্তম দাস যৌথভাবে পেশোয়াদের দরবারে আবেদন করেন।১৮১৩ সালের পেশোয়া দরবারের একটি তাম্রশাসন থেকে জানা যায়, এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পেশোয়া দরবার ১৮০১ সালের নাশিকের সিংহস্থ পর্ব থেকে শৈব দশনামী সন্ন্যাসী ও বৈষ্ণব বৈরাগীদের পৃথক স্থানে স্নানের নির্দেশ জারি করে।এই নির্দেশ অনুযায়ী শৈব দশনামী সন্ন্যাসীদের স্নানের জন্য ত্র্যম্বকেশ্বরের কুশাবর্ত কুণ্ড ও বৈষ্ণব বৈরাগীদের স্নানের জন্য নাশিকের রামঘাট নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়।৮
যদুনাথ সরকার জানিয়েছেন, ভারতের ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সরকার বহুকাল ধরে চলে আসা রীতি সম্পর্কে অনুসন্ধানের পর নিয়ম বেঁধে দেয়, কুম্ভ মেলায় পর্ব (পুণ্য) দিনগুলিতে শাহী স্নানের জন্য শোভাযাত্রার প্রথমে থাকবেন নাগা ও গোসাইঁ সাধুরা (এঁরা শম্ভুদল নামে পরিচিত), তারপর থাকবেন বৈষ্ণব বৈরাগী সাধুরা (এঁরা বৈষ্ণবদল নামে পরিচিত) তারপর থাকবেন উদাসী নানকপন্থী সাধুরা ও সবশেষে থাকবেন নির্মলা সাধুরা।দশনামী আখাড়াগুলির মধ্যেও শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণের ক্রম ঠিক করে দেওয়া হয়।হরিদ্বারের কুম্ভে শোভাযাত্রায় প্রথমেথাকবে নিরঞ্জনী আখাড়ার সঙ্গে জুনা, আবাহন ও আনন্দ আখাড়া তারপর থাকবে নির্বাণী (মহানির্বাণী) আখাড়া ও তার সঙ্গে অটল আখাড়া।প্রয়াগের কুম্ভে শোভাযাত্রায় প্রথমেথাকবে নির্বাণী (মহানির্বাণী) আখাড়া ও তার সঙ্গে অটল আখাড়া।৯স্পষ্টত আখাড়াগুলির প্রাচীনতা অনুসারে এই রীতির প্রচলন করা হয়েছিল।
আখাড়ার প্রশাসনিক কাঠামো
ত্রিবেণীদত্ত ত্রিপাঠী ১৯৪৩ সালে প্রকাশিত মহানির্বাণী আখাড়ার প্রযাগরাজের দারাগঞ্জে অবস্থিত প্রধান কার্যালয়ের নিয়মাবলির ভিত্তিতে ঐ আখাড়ার প্রশাসনের যে বিবরণ দিয়েছেন, সেই বিবরণ থেকে বর্তমান আখাড়াগুলির প্রশাসনিক কাঠামো সম্পর্কে একটি সাধারণ ধারণা পাওয়া যায়।মহানির্বাণী আখাড়ার প্রশাসনিক কাঠামোর মূল ভিত্তি দ্বিস্তর পঞ্চায়ত; শম্ভুপঞ্চ বা সাধারণ পঞ্চ ও শ্রী পঞ্চ, রমতা পঞ্চ বা কার্যকারিণী পঞ্চ।আখাড়ার সদ্য দীক্ষাপ্রাপ্ত নাগা সাধু থেকে মহান্ত পর্যন্ত শম্ভুপঞ্চ বা সাধারণ পঞ্চায়তের সদস্য।সাধারণত কুম্ভ পর্বের সময় সাধারণ পঞ্চায়তের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।তবে প্রয়োজন হলে সাধারণ পঞ্চায়ত বা কার্যকারিণী পঞ্চায়তের ৭৫% সদস্যের অনুরোধে বিশেষ অধিবেশন ডাকা যেতে পারে।কুম্ভ পর্বের সময় অনুষ্ঠিত অধিবেশনে সমস্ত সদস্যের উপস্থিতিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের দ্বারা আখাড়ার ৮টি দাওয়ার জন্য ৮ জন শ্রীমহান্ত নির্বাচিত হন।এই অধিবেশনে ৮ জন শ্রীমহান্তকে সহায়তা করার জন্য সমস্ত আখাড়া থেকে ৮ জন কারবারীকেও নির্বাচন করা হয়।এই ৮ জন শ্রীমহান্ত ও ৮ জন কারবারীকে নিয়ে কার্যকারিণী পঞ্চায়ত গঠিত হয়।কার্যকারিণী পঞ্চায়ত শ্রী পঞ্চ, রমতা পঞ্চ ও পরমেশ্বর নামেও পরিচিত।এই পঞ্চায়তের সমস্ত সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে নেওয়া হয়।আখাড়ার সমস্ত সম্পত্তির অধিকার সাধারণ পঞ্চায়তের উপর ন্যস্ত। আখাড়ার প্রধান কার্যালয় ও শাখাগুলির পরিচালনার দায়িত্ব শ্রী পঞ্চের উপর ন্যস্ত।কারবারীদের শ্রী পঞ্চদের সহায়তার পাশাপাশি তাঁদের উপর শ্রী পঞ্চ দ্বারা ন্যস্ত দায়িত্বও নির্বাহ করতে হয়। শ্রী পঞ্চ আখাড়ার কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য প্রধান কার্যালয় ও শাখাগুলিতে এক বা একাধিক সচিব নিযুক্ত করে।সচিবরা আদালতে আখাড়ার প্রতিনিধিত্ব করেন। শ্রী পঞ্চের সদস্যরা যেহেতু পরিব্রাজন করেন, সেহেতু প্রধান কার্যালয় ও শাখাগুলির জন্য সেখানকর স্থায়ী সদস্যদের মধ্য থেকে থানাপতি নামের কর্মকর্তাদের নিযুক্ত করেন।শ্রী পঞ্চের থানাপতিদের নিয়োগ, বরখাস্ত ও বদলি করার অধিকার আছে।শ্রী পঞ্চ আখাড়ার প্রধান কার্যালয় ও শাখাগুলিতে সেখানকার সচিব ও থানাপতির সঙ্গে পরামর্শ করে সমস্ত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ও অনীনন্য আর্থিক বিষয়ের দেখাশোনা জন্য একজন কোঠারী (কোষাধ্যক্ষ) নিযুক্ত করেন।কোঠারীশ্রী পঞ্চ, সাধারণ পঞ্চ, সচিব ও থানাপতির নির্দেশ মতো অর্থব্যয় করেন।প্রত্যেক আখাড়ার পদাধিকারী ছাড়া অন্য সাধারণ সদস্যদের মধ্যে উল্লেখনীয় নাগা সন্ন্যাসীগণ, পূজারী, ভাণ্ডারী, গাড়িচালক, সেবকবৃন্দওসাফাই কর্মী।১০
অখিল ভারতীয় আখাড়া পরিষদ
ভারতের স্বাধীনতার পর,১৯৫৪ সালের এলাহাবাদের (প্রয়াগরাজ) কুম্ভমেলায় পদপিষ্ট হয়ে বহু তীর্থযাত্রীর মৃত্যুর প্রেক্ষাপটে শৈব, বৈষ্ণব ও নানকপন্থী সম্প্রদায়েরআখাড়াগুলির প্রতিনিধি সাধুরা মিলিত হয়েপারস্পরিক বিরোধ সংঘর্ষের পরিবর্তে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের জন্যঅখিল ভারতীয় আখাড়া পরিষদ নামে একটি সংগঠন গঠন করে।স্বাধীনতার পর বিদ্যমান ১৩টি আখাড়া এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়।২০১৪ সালে নিরঞ্জনী আখাড়ার প্রয়াগরাজে অবস্থিত বাঘম্বরী গদ্দীর পীঠাধীশ্বর সাধু নরেন্দ্র গিরি (পূর্ব নাম রাজেন্দ্র সিংহ) অখিল ভারতীয় আখাড়া পরিষদের অধ্যক্ষ নির্বাচিত হন। ২০১৯ সালে তিনি এই পদে পুনর্নির্বাচিত হন এবং ২০২১ সালে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত তিনি এই পদে বহাল ছিলেন।১১২০১৭ সালের ১০ সেপ্টেম্বর আখাড়া পরিষদ ১৪ জন ফর্জি অর্থাৎ নকল বাবার নাম প্রকাশ করে।এই তালিকাতে আশারাম বাপু, তার পুত্র নারায়ণ সাই, গুরমিত রাম রহিম, সুখবিন্দার কৌর বা রাধে মাঁ, নির্মল বাবা, স্বামী অসীমানন্দ, সচ্চিদানন্দ গিরি, ওম বাবা বা বিবেকানন্দ ঝা, ইচ্ছাধারী ভীমানন্দ বা শিবমূর্তি দ্বিবেদী, ওম নমঃ শিবায় বাবা, রামকৃপাল, কুশ মুনি, মলখান গিরি ও বৃহস্পতি গিরির নাম উল্লিখিত হয়েছে।এরপর আখাড়া পরিষদ ২০১৭ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর আর একটি তালিকা প্রকাশ করে।এই তালিকায় দিল্লির বীরেন্দ্র দীক্ষিত কালনেমি, বস্তির সচ্চিদানন্দ সরস্বতী ও এলাহাবাদের ত্রিকাল ভবন্তার নাম উল্লিখিত হয়েছে।২০১৮ সালের ১৬ মার্চ প্রকাশিত তৃতীয় তালিকায় দিল্লির স্বামী চক্রপাণি ও সম্ভলের প্রমোদ কৃষ্ণমের নাম রয়েছে।১২
নরেন্দ্র গিরির মৃত্যুর পর অখিল ভারতীয় আখাড়া পরিষদ দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যায়।২০২১ সালের ২১ অক্টোবর হরিদ্বারে নির্মোহী, নির্বাণী, দিগম্বর, মহানির্বাণী, অটল, বড়া উদাসীন ও নির্মল আখাড়ার প্রতিনিধি সাধুরা মহানির্বাণী আখাড়ার রবীন্দ্র পুরীকে অধ্যক্ষ ও নির্মোহী আখাড়াররাজেন্দ্র দাসকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করেন। অন্য দিকে ২০২১ সালের ২৫ অক্টোবর প্রয়াগরাজে নিরঞ্জনী, জুনা, আবাহন, আনন্দ, অগ্নি, নয়া উদাসীন আখাড়াও নির্মল আখাড়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠীর প্রতিনিধি সাধুরা নিরঞ্জনী আখাড়ার রবীন্দ্র পুরীকে অধ্যক্ষ ও জুনা আখাড়ার হরি গিরিকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করেন।১৩২০২৫ সালের ২৭ মেনানকপন্থী সাধুদের তিনটি আখাড়া, শ্রী পঞ্চায়তী আখাড়া বড়া উদাসীন, শ্রী পঞ্চায়তী আখাড়া নয়া উদাসীন ও শ্রী পঞ্চায়তী আখাড়া নির্মলেরপ্রতিনিধি সাধুরা প্রয়াগরাজে মিলিত হয়ে উদাসীন নির্মল পরিষদ নামে একটি পৃথক সংগঠন গঠন করে।নয়া উদাসীনআখাড়ার সচিব জগতার মুনিকে এই সংগঠনের অধ্যক্ষ ও বড়া উদাসীনআখাড়ার মহান্ত দুর্গাদাসকে সম্পাদক ও নির্মল আখাড়ার সচিব দেবেন্দ্র সিংহ শাস্ত্রীকে কোষাধ্যক্ষ নিযুক্ত করা হয়। তিনটি নানকপন্থীআখাড়ার সাধুরা অখিল ভারতীয় আখাড়া পরিষদের কোনও গোষ্ঠীর সঙ্গে আদৌ যুক্ত থাকবেন কিনা এই বিষয়ে এই সংগঠন প্রয়াগরাজে মিলিত হয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলে ঠিক হয়।১৪
টীকা
- “Aside from the inter-caste dynamics of the Naga order, what concerns us here is the explicit and effective incorporation of martial practices into an ascetic way of life. Naga combat was not a simple matter of sannyasis taking up arms to defend themselves. For the Nagas, fighting became an integral feature of their identity…Whatever factor Shudra recruitment may have played, it seems clear that Naga sannyasis, like wrestlers, translated yogic spirituality into terms more compatible with worldly action.”–Joseph S. Alter, ‘The Wrestler’s Body: Identity and Ideology in North India’, p. 224.
- Ibid, pp. 199-200.
- Carnegy, ‘Historical Sketch of Tahsil Fyzabad, Zillah Fyzabad including Parganas Haveli-Oudh Pachhimrath with the Old Capitals Ajudhia and Fyzabad’, p. 19.
- S. Ghurye, ‘Indian Sadhus’, p. 201.
- Jadunath Sarkar, ‘A History of Dasnami Naga Sanyasis’, 92-93.
- বেণীরামশর্মা গৌড়, ‘কুম্ভপর্ব-মাহাত্ম্য’,পৃ. ১৪-২১।
- Jamini Mohan Ghosh, ‘Sannyasi and Fakir Raiders of Bengal’, pp. 24-26.
- Richard Burghart, “Wandering Ascetics of the Rāmānandī Sect”, p. 374.
- Jadunath Sarkar, ‘A History of Dasnami Naga Sanyasis’, 99.
- ত্রিবেণীদত্ত ত্রিপাঠী, ‘হিন্দু মঠ (এক সমাজশাস্ত্রীয় অধ্যয়ন)’, পৃ. ১০৭-১০৯।
- Ashish Misra, “Akhara politics: An unholy affair” in ‘India Today’, 11 October 2021.
- অশোকত্রিপাঠী, ‘নাগা সন্ন্যাসীয়োঁ কা ইতিহাস’, পৃ. ৩৬৮-৩৬৯।
- Shilpi Sen, “Mahant Ravindra Puri of Niranjani Akhara elected as new president of Akhara Parishad” in ‘India Today’, October 25, 2021.
- Rajeev Mani, “Three Udasin Akharas form new parishad to maintain unity, exerting influence” in ‘The Times of India’, May 27, 2025.
আকর গ্রন্থ ও নিবন্ধ
অশোকত্রিপাঠী, ‘নাগা সন্ন্যাসীয়োঁ কা ইতিহাস’; প্রয়াগরাজ: সংরচনা প্রকাশন, ২০১৯।
ত্রিবেণীদত্ত ত্রিপাঠী, ‘হিন্দু মঠ (এক সমাজশাস্ত্রীয় অধ্যয়ন)’; বারাণসী: সঞ্জয় বুক সেন্টর, ১৯৮৮।
বেণীরামশর্মা গৌড়, ‘কুম্ভপর্ব-মাহাত্ম্য’; কাশী: ব্যাস পুস্তকালয়, ১৯৪৮।
G.S. Ghurye, ‘Indian Sadhus’; Bombay: The Popular Book Depot, 1953.
Jadunath Sarkar, ‘A History of Dasnami Naga Sanyasis’; Allahabad: Sri Panchayati Akhara Mahanirvani, 1958.
Jamini Mohan Ghosh, ‘Sannyasi and Fakir Raiders of Bengal’; Calcutta: Bengal Secretariat Book Depot, 1930.
Joseph S. Alter, ‘The Wrestler’s Body: Identity and Ideology in North India’; Berkley, Los Angeles, Oxford: University of California Press, 1992.
- Carnegy, ‘Historical Sketch of Tahsil Fyzabad, Zillah Fyzabad including Parganas Haveli-Oudh Pachhimrath with the Old Capitals Ajudhia and Fyzabad’; Lucknow: Oudh Government Press, 1870.
Richard Burghart, “Wandering Ascetics of the Rāmānandī Sect” in ‘History of Religions , May, 1983, Vol. 22, No. 4, Devotional Religion in India’; Chicago: University of Chicago Press, 1983, pp. 361-380.
আন্তর্জাল নিবন্ধ
Ashish Misra, “Akhara politics: An unholy affair” in ‘India Today’, 11 October, 2021.
[url: https://www.indiatoday.in/magazine/the-big-story/story/20211011-akhara-politics-an-unholy-affair-1859494-2021-10-01]
Rajeev Mani, “Three Udasin Akharas form new parishad to maintain unity, exerting influence” in ‘The Times of India’, May 27, 2025.
[url: https://timesofindia.indiatimes.com/city/allahabad/three-udasin-akharas-form-new-parishad-to-maintain-unity-exerting-influence/articleshow/121446598.cms]
Shilpi Sen, “Mahant Ravindra Puri of Niranjani Akhara elected as new president of Akhara Parishad” in ‘India Today’, October 25, 2021.
[url: https://www.indiatoday.in/india/story/mahant-ravindra-puri-niranjani-akhara-elected-president-akhara-parishad-1869194-2021-10-25]

